রংপুরে বর্ণিল আয়োজনে শুরু হয়েছে বিভাগীয় ভাওয়াইয়া উৎসব। রংপুর বিভাগের আট জেলার শিল্পীরা ভাওয়াইয়া গান পরিবেশন করবেন। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় তিনদিনের এ উৎসবের আয়োাজন করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ভাওয়াইয়া উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিভাগীয় কমিশনার। পরে ভাওয়াইয়া শিল্পীদের কণ্ঠে ‘রংপুর হামার রঙে ভরা রে, আরে ও বন্ধু আইসেন হামার বাড়ি’ গানের সুরের মধ্যদিয়ে শুরু হয় পুরো আয়োজন।
আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ রংপুর অঞ্চল । ভাওয়াইয়া এই অঞ্চলের পুরানো সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য-সম্পদ। আধুনিকতার সঙ্গে গা ভাসিয়ে বর্তমান প্রজন্ম শিককড়ের টান ভাওয়াইয়া থেকে অনেক দূরে। তাদের মাঝে ভাওয়াইয়াকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে অনেক বেশি করে।
ভাওয়াইয়া গানের শিক্ষা সংগ্রহ, সংরক্ষণ গবেষণায় নিবেদিত সংগঠক, শিল্পী, সুরকার, গীতিকারসহ ভাওয়াইয়া প্রেমীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে ভাওয়াইয়ার মানোন্নয়ন, প্রচার-প্রসার ও সংরক্ষণে সরকারের পাশাপাশি বর্তমান সমাজের সংস্কৃতিমনা বিত্তবানদেও ব্যাক্তিদের পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুর রেঞ্জের পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) মিজানুর রহমান, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) সায়ফুজ্জামান ফারুকী, রংপুর জেলা পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ডা. দেলোয়ার হোসেন। সভাপতির বক্তব্য রাখেন রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান।
এছাড়াও আলোচক ছিলেন সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজের বাংলা বিভাগের সাবেক প্রধান, সংগঠক ও গবেষক অধ্যাপক মোহাম্মদ শাহ্ আলম। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) আবু জাফর।
এর আগে বিকেল রংপুর জিলা স্কুল সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু সড়ক হতে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালীতে ভাওয়াইয়া শিল্পি, গীতিকার, সুরকার শিল্পী ও সংগঠকেরা অংশ নেন। শেষে শিল্পকলা একাডেমিতে বেলুন উড়িয়ে ‘রংপুর বিভাগীয় কমিশনার ভাওয়াইয়া উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। পওে প্রত্যেক জেলার শিল্পীরা তাদের আঞ্চলিক সংস্কৃতির ইতিহাস-ঐতিহ্য সুরের মূর্ছনায় তুলে ধরেন।
গতকাল শনিবার উৎসবের দ্বিতীয় দিন সকাল থেকে আলোচনা সভা শুরু হয় এবং বিকেল তিনটা থেকে শুরু হয়েছে গাইবান্ধা, লালমনিহাট, নীলফামারী ও দিনাজপুরের শিল্পীদের পরিবেশনা। আজ রোববার সমাপনি দিনে সকালে আলোচনা পর্ব শেষে বিকেল থেকে দর্শক মাতাবেন বিভাগের আট জেলার খ্যাতিমান ভাওয়াইয়া শিল্পীরা।