নৌকায় ভোট দিলে মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

- আপডেট সময় : ০২:৫১:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অগাস্ট ২০২৩ ৬৬ বার পড়া হয়েছে

আমার স্বপরিবারকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা দুই বোন দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে গেছি। ৮১ সালে বাংলাদেশে আসি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করে। শতবাধা উপেক্ষা করে আমি বাংলাদেশে ফিরে আসি দেশের মানুষের পাশে থাকার জন্য। আমি ৮১ সালে বাংলাদেশে এসে রংপুর বিভাগের প্রতিটি এলাকায় ঘুরেছি, দেখেছি মানুষের হাহাকার। আমাদের অঙ্গিকার ছিল যখনই ক্ষমতায় আসতে পারবো, এই মানুষদের ভাগ্যকে পরিবর্তন ঘটবো। দেশের মানুষের জীবনের মান উন্নত করবো। দেশের মানুষের জন্য যে স্বপ্ন দেখেছিলেন আমার বাবা জাতির পিতা মুজিবুর রহমান সেই লক্ষে কাজ করছি। গতকাল বুধবার বিকেলে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আওয়ামীলীগ আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আজকে আমরা সুভাগ্যবান আজ আমরা বাংলাদেশকে দারিদ্র মুক্ত করতে পেরেছি, ক্ষুধা মুক্ত করতে পেরেছি। এই আওয়ামী লীগের সময়ে রংপুরে খাদ্যের অভাব হয়নি। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলে নৌকায় ভোট পেলে দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। ২০৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেছিলাম, তখনই মঙ্গাছিল না। যখন ২০০১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে দুই হাতে টাকা পয়শা লুট করে, তার ছেলেরা মিলে। এই দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে, আবার দেশে মঙ্গা শুরু হয়। ২০০৮-এর নির্বাচনে আমরা সরকার গঠন করি। তারপর থেকে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। তারপর থেকে এ দেশের মানুষের কোনো কষ্ট হয় নাই। আমরা এই সাড়ে ১৪ বছর আমাদের যুবকদের জন্য প্রায় দুই কোটি ৩৫ লক্ষ যুবক কর্মসংস্থান আমরা ব্যবস্থা করতে পেরেছি। ন্যাশনাল সার্ভিসের মাধ্যমে আমরা ট্রেনিং দিয়েছি, কাজের ব্যবস্থা করেছি। রংপুরকে হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে আওয়ামীলীগ। আর এই বিভাগের সাথে সাথে সিটি কর্পোরশন হয়েছে। বিভাগের সঙ্গে অনেক প্রতিষ্ঠান যুক্ত। তা আমরা দিয়েছি। উত্তর বঙ্গ থেকে যোগাযোগ ৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় আমি ওই যমুনে নদীর ওপর রেল লাইন, বিদ্যুৎ গ্যাসের লাইনসহ সেতুন নির্মাণ করে আমরা অতি সহজে রাজধানী পৌছার জন্য আওয়ামীলীগ সরকারেই করেছে। আজকে যত রাস্তা ঘাটের উন্নতি তা আওয়ামীলীগ সরকারেই দিয়েছে। আজকে আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক করে দিয়েছি। ২০ প্রকাশের ওষুধ বিনা মুল্যে আমরা দিচ্ছি। মা বোনেরা আজকে পায়ে হেটে ঘরের কাছে চিকিৎসা পান, সে ব্যবস্থাও আওয়ামীলীগ সরকার করে দিয়েছে। বয়স্কভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী নিগৃীত ভাতা প্রতিবন্ধীদের ভাতা আমরা দিচ্ছি, আজকে মানুষের হাহাকার নেই। এই ভাতা নিয়ে আজকে পরিবারের মাঝে থাকতে পারছে স্বামী নিগৃীত ও বয়স্ক মানুষরা।
আওয়ামী লীগ কৃষকের বন্ধু উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১০ সালে আমরা কুড়িগ্রামে প্রথম এসে ১০ টাকায় কৃষকের ব্যাংক একাউন্ট খোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন শুরু করে ছিলাম। একজন কৃষক ১০ টাকার ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারে। কৃষক ভর্তুকির টাকা ওই ব্যাংক এ কাউন্ডের মাধ্যমে তুলতে পারছেন। ২ কোটি ১০ লক্ষ কৃষককে আমরা কৃষি উপকরণ কার্ড দিয়েছি। যাতে ওই কার্ড দেখে কৃষকরা দোকান থেকে কৃষি পন্য কিনতে পারে উৎপাদনের আগে আমরা সেই ব্যবস্থাও করেছি। সারের দাম কমে দিয়ে যাতে কৃষকের ঘরে সার পৌছে যায় সে ব্যবস্থাও আমরা করেছি। অথচ খালেদা জিয়া কি করেছিল, কৃষক সার চেয়েছে, গুলি করে মানুষকে হত্যা করেছে। ওই গাইবান্ধা মাহিমাগঞ্জেই তো হত্যা করলো খালেদা জিয়া, বাপ ছেলে গুলিতে এক সঙ্গে মারা গেলো। আমরা ছুটে গেছি সেই মানুষদের কাছে। ১৮জন কৃষক হত্যা করেছিল তারা। আর এখন কৃষকে সার খুজতে হয় না, আমরা কৃষকের ঘরে সার পৌছার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আমরা কথা দিয়েছিলাম সবার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিব। আজকে আমরা সব ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি।
আমি খালি হাতে আসিনি- উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখেছেন আমি কতগুলো প্রকল্পের উদ্বোধন করলাম। আমি জানি না আগে কখনও এতোগুলো প্রকল্প আর কেউ দিয়েছে কিনা। আমরা রংপুর পল্লী উন্নয়ন একাডেমিক প্রতিষ্ঠা করে দিয়েছি। সেখানে ট্রেনিং হবে পল্লী উন্নয়নের কাজ করতে পারবে, সে ব্যবস্থা করে দিতে পরেছি। ১০০ শয্যা বিশিষ্ট রংপুর শিশু হাসপাতাল এবং রংপুরে পুলিশ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। রংপুরে রেলওয়ের ষ্টেশন নির্মাণ করে দিয়েছি। এলেঙ্গা রংপুর ৪ লাইনের মহা সড়কে বর্ধিত করা হয়েছে। বগুড়া, রংপুর, সৈয়দপুর গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইন নির্মাণ প্রকল্প উত্তরের শিল্পায়নের নতুন মাত্রা যোগ হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শ্যামপুর সুগার মিল বন্ধ আছে, তা চালু করার ব্যবস্থা করা হবে।
ওই সমাবেশে সবাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের রংপুর শাখার আহবায়ক ডা. দেলওয়ার হোসেন। বক্তব্য দেন, আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বানিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সিসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।